আমতলী প্রতিনিধি ॥ নির্বাচনী সহিংসতাকে কেন্দ্র করে পাল্টা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে আমতলীর অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ গোলাম মোস্তফা, অবসরপ্রাপ্ত কৃষি অফিসার মোঃ জব্বার মল্লিক, কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ সুজাউদ্দিন মাহমুদ, প্রধান শিক্ষক মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাংবাদিক মহাসিন মাতুবাবর সরকারী স্কুল শিক্ষক মোঃ রাসেল মৃধা ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি সদস্য সফেজ উদ্দিন প্যাদাসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। চাওড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ আহুরুজ্জামান আলমাস খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মুক্তিযোদ্ধা, কৃষি অফিসার, কলেজ অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক,সাংবাদিক ও সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্মকান্ডের অভিযোগ এনে মামলা দায়েরের ঘটনায় আমতলীর সুশীল সমাজ ও সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে। এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবীতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে তালুকদার বাজারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। ওই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় কয়েক হাজার নারী-পুরুষ অংশ নেন। জানাগেছে, উপজেলার চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গত সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামীলীগ প্রার্থী মোঃ আখতারুজ্জামান বাদল খানের মামাতো ভাই উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ মাহবুব ইসলাম ও হত্যা মামলার আসামী মহিবউল্লাহ কিরণসহ ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পাতাকাটা বাঁধে উপরে স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মহসিন হাওলাদারের কর্মী সমর্থকদের উপর আকস্মকি হামলা চালায়। এতে ৭ জন আহত হয় ,দোকান ভাংচুর করে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর দুইটি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে এবং ৩ টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভাইয়ের ছেলে মোঃ মনিরুল ইসলাম বুধবার রাতে বাদী হয়ে মাহবুবকে প্রধান ও হত্যা মামলার আসামী মোঃ মহিবউল্লাহ কিরণসহ ৩৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই আওয়ামীলীগ প্রার্থীর ছোট ভাই মোঃ আহুরুজ্জামান আলমাস খান বাদী হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে পাল্টা মামলা দায়ের করেন। মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয় অবসরপ্রাপ্ত কৃষি অফিসার আব্দুল জব্বার মল্লিকের সভাপতিত্বে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোঃ মহসিন হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ মোঃ গোলাম মোস্তফা,সাবেক ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন মুন্সি, শিক্ষক আলতাফ হোসেন বিএসসি, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ইউপি সদস্য মোঃ সফেজ উদ্দিন প্যাদা, ইউপি সদস্য জাকির হোসেন, উপজেলা যুবলীগ সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম মাদবর। বক্তারা দ্রুত এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান অন্যথায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষনা দেন। মামলার প্রধান আসামী অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ গোলাম মোস্তফা বলেন,আওয়ামীলীগ প্রার্থী মোঃ আখতারুজ্জামান বাদল খান একজন দুর্নীতিবাজ। আমি তাকে সমর্থন না দেয়ায় আমাকে মিথ্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়ে বৃদ্ধ বয়সে সন্ত্রাসী মামলার প্রধান আসামী হয়েছি। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এটাই আমার বড় পাওনা। আমি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ ঘটনার সুবিচারের দাবী জানাই। স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোঃ মহসিন হাওলাদার বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, অবসরপ্রাপ্ত কৃষি অফিসার, কলেজ অধ্যক্ষ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক,সাংবাদিক ও একজন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে মিথ্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে। এটা অত্যান্ত লজ্জাজনক ও হাস্যকর। তিনি আরো বলেন, আওয়ামীলীগ প্রার্থী আখতারুজ্জামান বাদল খান আমার কর্মী ও সমর্থকদের হয়রানি করতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। দ্রুত এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানাই। আওয়ামীলীগ প্রার্থী মোঃ আখতারুজ্জামন বাদল খান বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মহসিনের নেতাকর্মীরা আমার মোটর সাইকেল ও নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করায় মামলা দেয়া হয়েছে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মামলার প্রধান আসামী করা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন জবাব না দিয়ে ফোন কেটে দেন। আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, পাল্টাপাল্টি মামলা দুটি সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply